মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১

কোন কোন বিষয়ে অনলাইনে ইনকাম করা যায়? পার্ট- ৩

 

গাইডলাইন ফর অনলাইন ইনকাম অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট:- ৩

আজকে এই পোস্টের মধ্যে দিয়ে টপিকটি শেষ হতে যাচ্ছে। আশা করি পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন। পড়লে অবশ্যই উপকার হবে, কারণ আমি চাইনা আমার পোস্ট পড়ে কারও সময়টি অপচয় হোক।

আজকে জানাবো অনলাইনে কোন কোন বিষয়ে পারদর্শী হলে আপনি ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবেন।
আপনি অনলাইনে অনেকভাবেই ইনকাম করতে পারবেন,
তবে যে কাজগুলো আমি পার্ট-১ এ বলছি সেগুলো ফলো করবেন এবং সেগুলো থেকে বিরত থাকতে পারেন। সাথে নিজে থেকেও একটু চিন্তা করবেন কোন কাজটি আপনার জন্য সময় অপচয়ের কাজ মনে হচ্ছে এবং কোন কাজের ভবিষ্যৎ নেই বলে মনে হচ্ছে, সে কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

অনলাইনে ইনকামের অসংখ্য টপিকের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টপিক নিয়ে আজকে আলোচনা করবো, কারণ সব বিষয় তো একটি পোস্টে বলা কখনওই সম্ভব নয়।

তাহলে শুরু করা যাক..

১. প্রথমে যে টপিকটি বলবো, সেটি হলো এসইও (SEO).. এর মানে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, আপনি যদি এটি ভালোভাবে রপ্ত করতে পারেন। তাহলে জীবনে আপনাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হবেনা।
এখন আপনি বলতে পারেন, আরে ভাই কি বলো এসব? বিষয়টিই তো বুঝতেই পারলামনা, আর বলছো পিছনে ফিরে তাঁকাতে হবেনা।
আরে, আমি তো আছিই আপনাকে ব্যাসিক ধারণা দেয়ার জন্য.. তাহলে SEO এর ব্যাসিক বিষয়টি জেনে নিন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা যাকে সংক্ষিপ্তভাবে বলা হয় এসইও (SEO).
এর মানে হচ্ছে যেকোন সার্ভিস, গুগল অথবা যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেইজে নিয়ে আসা। এখন আপনি বলতে পারেন, আমি গুগলের প্রথম পেইজে নিয়ে আসলে আমার কি লাভ?
শুধু কি লাভ নয়, অনেক লাভ। আপনি যদি এসইও তে এক্সপার্ট হোন, তাহলে আপনি নিজের জন্য যেকোন একটি ব্লগ তৈরি করে, সেটি গুগলের প্রথম পেইজে রেংক করাইতে পারলে হাজার হাজার ট্রাফিক সেই সাইটে পেয়ে যাবেন।
আপনি হয়তো জানেন প্রতিদিন বিলিয়ন বিলিয়ন সার্চ হয় এই গুগলে।
আপনার সাইটে যখন হাজার হাজার ট্রাফিক/মানুষ প্রতিদিন আসবে তখন, বিভিন্ন কোম্পানি আপনার সাইটে তাদের বিভিন্ন প্রডাক্ট কিংবা সার্ভিসের অ্যাডভার্টাইজমেন্ট প্রতিনিয়ত দিবে এবং আপনি অনেক ভালো পরিমান এমাউর্ট, সার্ভিস চার্জ বাবাদ গ্রহণ করতে পারবেন।
এরপর আপনি নিজস্ব বিজনেস চালু করতে পারেন৷
ধরুণ আপনি ঘড়ির বিজনেস চালু করলেন, এখন সবাই ঘড়ি কিনতে গুগলে সার্চ দিলো, আপনি যদি এসইও এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার পেইজটিকে গুগলের প্রথম পেইজে নিয়ে আসবেন এবং কেউ সার্চ দিলেই প্রথমে আপনার সাইটটি পেয়ে যাবে।
আর ৯৯%+ মানুষ প্রথম পেইজটিতে ক্লিক করবে। আর আপনার ঘড়ি পছন্দ হলে আপনি ডেইলি অনেক ভালো পরিমাণে সেলস জেনারেট করতে পারবেন।
এরপর, বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইট গুগলের প্রথম পেইজে নিয়ে আসতে আপনাকে হায়ার করবে যার মাসিক চার্জ কমপক্ষে ৫০০-১০০০$+ যার বাংলাদেশী টাকায় হবে প্রায় ৪০-৮০ হাজার টাকা।
আপনারা আগ্রহী হলে এটি নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখবো। কিংবা আপনি গুগলে সার্চ দিয়েও বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।

২. দুই নাম্বারে যে বিষয়টি বলবো তা হলো ই-কমার্স বিজনেস/ ডিজিটাল মার্কেটিং। যদিও বিষয়টি ১ নং এর সাথে কম্পেয়ার করা যায়। তবে, এটি কিছুটা ভিন্ন বলা যেতে পারে।  আপনি চাইলে অনলাইনে একটি বিজনেস শুরু করতে পারেন। যেমন, কেউ কোন প্রডাক্ট অর্ডার করলে, আপনি দেশের যেকোন প্রান্তে উন্নতমানের পণ্য সরবরাহ করবেন।
কিংবা কারও কোন প্রডাক্ট কিংবা সার্ভিসের আপনি মার্কেটিং করে দিয়েও ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন।
যা গুগল, ইউটিউব কিংবা ফেসবুকের মাধ্যমে করতে পারেন। এখন সবথেকে বেশি প্রচলিত হচ্ছে ফেসবুক মার্কেটিং, কারণ সব মানুষ কমবেশি ফেসবুক ইউজ করে।
আর এখানে ফেসবুকে অ্যাডস কিংবা নিজস্ব পেইজ/গ্রুপের মাধ্যমে আপনি মার্কেটিং করলে অনেক ভালো আউটপুট পাওয়া যেতে পারে।

৩. এরপর যেটি রয়েছে তা হলো, ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ-
আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমেও অনেক ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারেন। এজন্য আপনাকে ভালো কোডিং শিখতে হবে। তবে, ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করতে চাইলে ব্যাসিক কোডিং শিখলেই হয়ে যাবে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে এর ভালো পরিমাণ ডিমান্ড রয়েছে। প্রতি ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের জন্য আপনি ১০০$-৪০০$ পর্যন্ত পেতে পারেন। যা করতে আপনার হয়তো ৩-৪ ঘন্টা সময় লেগে যেতে পারে।

৪. এরপর রয়েছে, অ্যাপস ডেভেলপমেন্টঃ-
এটি ঠিক ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মতোই, এর চাহিদাও সমানভাবে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে রয়েছে। কারণ, আজকাল যার একটি ওয়েবসাইট আছে, সে চায় অ্যাপসের মাধ্যমেও তার সার্ভিস প্রোভাইড করতে। এজন্য আপনাকে অবশ্যই কোডিং শিখতে হবে। তবে, সাধারণ-মানের কিছু অ্যাপস তৈরি করতে সেমি-কোডিং শিখলেই হয়ে যাবে, তবে এটি দিয়ে খুব ভালো কিছু করতে পারবেননা।

৫. এখন যেটি বলবো সেটি হলো, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং:-
অনলাইন অফলাইন মার্কেটপ্লেসে এর প্রচুর ডিমান্ড রয়েছে। আপনি যেকোন বিজনেসই শুরু করুন না কেন, আপনার একটি লোগো কিংবা ব্যানার অবশ্যই প্রয়োজন। আর এই লোগো কিংবা যেকোন ধরণের ডিজাইনিং করে আপনি ৫$-২০০$ পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

৬. এরপর রয়েছে.. ইউটিউবিং.
আপনি ইউটিউবিং করার মাধ্যমেও অনেক ভালো কিছু করতে পারবেন। আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী আপনি যেকোন বিষয়ে ইউটিউবিং করতে পারেন।
আপনি যখন পপুলার হয়ে যাবেন, তখন বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে তাদের সার্ভিস স্পন্সর করার জন্য অনেক ভালো পরিমাণ চার্জ প্রদান করবে।
এবং আপনি এর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়্যাট কিংবা নিজের কোন প্রডাক্ট/সার্ভিস সহজেই সেল করতে পারবেন। কিংবা অ্যাডসের মাধ্যমেও ইনকাম করতে পারবেন।  ইউটিউব নিয়ে আমার একটি "ইউটিউবিং গাইড" বই আছে, যেটি পড়লে আশা করি আপনাকে হাজার হাজার টাকা দিয়ে কোন ধরণের কোর্স করতে হবেনা ইউটিউবে আসার জন্য।

৭. অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েটঃ-
এর মাধ্যমে আপনি অ্যামাজনের বিভিন্ন প্রডাক্ট বা সার্ভিস,
যেকোন মাধ্যমে যেমন:- ফেসবুক, ইউটিউব কিংবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে সেল করাইতে পারলে, তারা প্রতি প্রডাক্ট সেলে একটি ভালো পরিমান কমিশন দিবে।
এজন্য অবশ্যই আপনাকে যেকোন একটি মাধ্যমে পপুলার হলে ভালো হয়।

৮. এরপর বলবো.. ভিডিও এডিটিং/ এনিমেশন:-
আজকাল এর অনেক কদর রয়েছে.. বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রডাক্ট/সার্ভিসের জন্য ভিডিও তৈরি করে থাকে, আপনি যদি ভিডিও এডটিং এ আগ্রহী হোন তাহলে এখান থেকেও অনেক ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন।

৯. এরপর যে বিষয়টি বলবো তা হলো.. ব্লগিং/কন্টেন্ট রাইটিং..
আপনি যদি লিখালিখি করতে পারেন, তাহলে আপনি একটি ব্লগ সাইট খুলে সেখানে প্রতিনিয়ত লিখালিখি করে,
গুগল অ্যাডস, অ্যাফিলিয়েট কিংবা অন্যকে সার্ভিস প্রদান করে ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারেন।
অথবা আপনি যদি লিখতে ভালোবাসেন তাহলে অনলাইন মার্কেটপ্লেস কন্টেন্ট রাইটিং, মানে মানুষ আপনাকে কোন একটি পেইজ দিবে আপনি সেটি দেখে দেখে লিখে তাদের দিবেন। অথবা তারা কোন বিষয়ে লিখতে বলবে আপনি লিখে তাদের দিয়ে দিবেন। এভাবে প্রতি লিখার জন্য ৫০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত ইজিলি চার্জ করতে পারেন।
তবে, যেহেতু এটি সহজ কাজ, তাই এর কম্পিটিটরও অনেক বেশি হবে, কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে।

১০. আজকের পোস্টের সর্বশেষ যে টপিকটি বলবো, তা হলো:- বই লেখা।
হ্যা, ঠিকই শুনেছেন। আপনি যদি কোন বিষয়ে পারদর্শী হোন, তাহলে সেই বিষয়ের উপর বই লিখে ফেলুন। তবে এজন্য অবশ্যই আপনাকে প্রাথমিকভাবে নিজেকেও অনেক বই পড়তে হবে এবং
বিভিন্ন জায়গায় লিখালিখি করে প্রাকটিস করতে হবে। মানুষ আপনার লিখা কেমন পছন্দ করছে কি না, তা জানতে হবে।
সাথে আপনাকে শুদ্ধ বানান চর্চায় পারদর্শী হতে হবে।

এছাড়াও আরও অনেক বিষয় রয়েছে, তবে উপরোক্ত বিষয়গুলোই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।
আর এই পোস্টটি কখনওই ডেটেইলস বিষয়ে ছিলোনা। তাই কোনো টপিকেরই ডিটেইলস দিতে পারলামনা।
ডিটেইলস দিতে গেলে হয়তোবা সারাদিন লেগে যেতো।
এই পোস্টটির উদ্দেশ্য হলো আপনি কোন বিষয়ে আগ্রহী সেটি বেঁছে নেয়া।
যে বিষয়টি আপনার ভালো লাগবে সেটি বেঁছে নিয়ে গুগল কিংবা ইউটিউবে এ সম্পর্কে একটু ডিটেইলস জানার চেষ্টা করুন।
আর আপনার ইন্টারেস্টেড বিষয়টি আমাকে কমেন্টে জানাতে পারেন, আমার কাছে থাকলে কিংবা সম্ভব হলে সেটির ফ্রি কোর্স আপনাকে দিয়ে হেল্প করার চেষ্টা করবো।

> আপনি প্রাথমিকভাবে কখনোই কোনো কোর্স কিনবেননা। গুগল কিংবা ইউটিউবে ফ্রিতেই প্রচুর ভিডিও কিংবা ব্লগ পেয়ে যাবেন, সেগুলো পড়ে নিজে নিজেই শেখার চেষ্টা করুন।
নাহলে অনেক টাকা দিয়ে কোর্স ক্রয় করার পর দেখলেন,
বিষয়টি আপনার কাছে আর ভালো লাগছেনা, তখন না পারবেন এগিয়ে যেতে এবং না পারবেন পিছিয়ে আসতে।
শুধুশুধু আপনার টাকাটি জলে যাবে। আর কোর্স দিয়ে খুব ভালোভাবে শিখতে পারবেননা, যতটা নিজে খোঁজ করে কষ্ট করে শিখবেন। শেখার জন্য অবশ্যই গুগল কিংবা ইউটিউবের হেল্প নিবেন।

আশা করি পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে।
আপনার জন্য শুভকামনা জানিয়ে পোস্টটি এখানেই শেষ করছি। (ধন্যবাদ)


প্রথম পার্ট